রক্তচোষা বাদুড় কিংবা ভ্যাম্পায়ার, এই তাঁর পরিচয়। তাঁর প্রাসাদে একবার যে আসে, আর ফেরে না কখনও। কেবল পাওয়া যায় একটা রক্তহীন মৃতদেহ। এইভাবেই এক বিখ্যাত উপন্যাস আর তার কাহিনি অবলম্বনে তৈরি সিনেমার মাধ্যমে কাউন্ট ড্রাকুলাকে চিনেছে সারা বিশ্ব। যত না চিনেছে, তার চেয়ে বেশি ভয় পেয়েছে। আর এই ভয়ের আড়ালে রয়ে গিয়েছে ড্রাকুলার সত্যি পরিচয়। কে এই কাউন্ট ড্রাকুলা? নিছক সাহিত্যের চরিত্র? নাকি এর মধ্যে রয়েছে বাস্তবের কোনও আদল?
ড্রাকুলা। নাম শুনলেই যেন শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে যায় বরফের স্রোত। মনে পড়ে যায় সেই বিরাট প্রাসাদের কথা, যার একচ্ছত্র অধিপতি রাত নামলেই জেগে ওঠেন অন্ধকারের শক্তি নিয়ে। ছলে বলে কৌশলে কোনও মানুষকে নিয়ে আসেন নিজের কবজায়, আর তারপর সেই হতভাগ্যের গলায় বসে যায় তাঁর শ্বদন্ত। নিঃশেষে শুষে নেয় শিকারের শরীরের সব রক্ত। নতুন করে শক্তি সংগ্রহ করে উঠে দাঁড়ান অন্ধকারের রাজা, কাউন্ট ড্রাকুলা।
আরও শুনুন: গোপনে উপহার দিতেন শিশুদের, ঘটাতেন অলৌকিক ঘটনা… সান্তা ক্লজ কি আসলে ইনিই?
কেবল মনের মাধুরী দিয়ে গড়া চরিত্র নন এই কাউন্ট ড্রাকুলা। রোমানিয়া অঞ্চলে নাকি সত্যিই এককালে রাজ্যপাট ছিল তাঁর। আসলে কে ছিলেন তিনি? কেনই বা তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে এমন কিংবদন্তি?
কাউন্ট ড্রাকুলার আসল নাম তৃতীয় ভ্লাদ। তবে তাঁর উপাধি ছিল ভ্লাদ দ্য ইম্পেলার। আর এই ইম্পেলার শব্দটির সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে ড্রাকুলার রক্তচোষা মিথের উৎস। কারণ শত্রুর রক্ত দেখতে ভালবাসতেন এই নিষ্ঠুর শাসক। শত্রুকে শাস্তি দেওয়ার জন্য এক নৃশংস উপায় অবলম্বন করতেন তৃতীয় ভ্লাদ। শূল, অর্থাৎ কোনও ধারালো ফলাওয়ালা দণ্ডে গেঁথে ফেলা হত সেই হতভাগ্য মানুষগুলোকে। খোলা আকাশের নিচে দিনের পর দিন ওইভাবে থাকতে থাকতে অমানুষিক যন্ত্রণায় মৃত্যু হত তাদের। জীবন্ত অবস্থাতেই তাদের শরীর থেকে মাংস ঠুকরে খেত শিকারি পাখিরা। শোনা যায়, একটা গোটা সৈন্যবাহিনীকেই নাকি এইভাবে শাস্তি দিয়েছিলেন ভ্লাদ। মৃত্যুর পরেও সেই দেহগুলো রেখে দেওয়া হয়েছিল ওইভাবেই। যাতে তা দেখে সবাই আন্দাজ করতে পারে, ভ্লাদের বিরোধিতা করলে তার ফল কী হবে। এই ঘটনার পরেই ‘টেপিস’ বা ‘দ্য ইম্পেলার’ তকমা জুড়ে যায় ভ্লাদের নামের সঙ্গে।
আরও শুনুন: দুধের শিশুকে পাঠাতে হবে পার্সেল করে, কেন এমন আজব দাবি করেছিলেন মহিলা?
রোমানিয়ার ওয়ালাশিয়া অঞ্চলের শাসক দ্বিতীয় ভ্লাদের সন্তান ছিলেন তৃতীয় ভ্লাদ। ১৪৩১ সালে অটোমান সাম্রাজ্য বিরোধী খ্রিস্টীয় সংগঠন ‘অর্ডার অব দ্য ড্রাগন’-এর সদস্য হয়ে দ্বিতীয় ভ্লাদ নাম নেন ‘ড্রাকুল’। ‘ড্রাকুলের সন্তান’ তৃতীয় ভ্লাদের নাম তাই ড্রাকুলা।
শুনে নিন বাকি অংশ।