সোমবার শিবের বড় প্রিয়। তবে এবছরের মতো এটাই শেষ। আগামী সোমবার নতুন বছর শুরু হয়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে পুরনো বছরের শেষ সোমবারটিকে ‘বিশেষ’ ভাবা যেতেই পারে। এদিন কোন উপাচারে পুজো করলে তুষ্ট হবেন মহেশ্বর? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ফুরিয়ে আসা বছরের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে সকলের মনে একটাই প্রার্থনা, ভালো কাটুক নতুন বছর! আদতে কী হবে তা সময় বলবে, তবে ভাবনায় দোষ কোথায়! আর সেখানেই ফিরে ফিরে আসছে একটাই কথা, নতুন বছরে যেন সব ভালো হয়। তবে বছর ভালো করার প্রথম কাজটা পুরনো বছরেই সেরে ফেলা যেতে পারে। ঠিক কোন কাজের কথা বলছি?
বলছি প্রার্থনার কথা, দেবাদিদেব মহাদেবের স্মরণে আসার কথা। শিবের বরে যে কোনও বিপদ কেটে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নতুন বছর ভালো রাখার দায়িত্বও তাঁকে দিলেই নিশ্চন্ত হওয়া যায়। এমনিতে শিবপুজোর কোনও নির্দিষ্ট দিন নেই। তবে শাস্ত্র বলে সপ্তাহের প্রথমদিন অর্থাৎ সোমবার শিবের বড় প্রিয়। এইদিন ভক্তিভরে শিবপুজো করলে নিশ্চয়ই ফল মেলে। এই বছরের মতো সোমবারের পালা শেষ। আগামী সোমবার উলটে যাবে ক্যালেন্ডারের পাতা। সেক্ষেত্রে এইদিনটা বিশেষ উপাচারে শিবের পুজো করলে সংসারের সার্বিক মঙ্গল হবে।
যে কোনও পুজোর ক্ষেত্রেই মনের ভক্তি সারকথা। শিবপুজোর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে এক্ষেত্রে যিনি ভক্তের মনে দয়ার উদ্রেক হওয়াও আবশ্যক। শিব জ্ঞানে জীব সেবার মান্যতা দেয় শাস্ত্রও। মূর্তি গড়ে শিবপূজার তেমন প্রচলন না থাকলেও, দেশজুড়ে শিবলিঙ্গে পুজোর চল রয়েছে। কারও দ্বারা স্থাপিত হোক অথবা স্বয়ম্ভূ, শিবলিঙ্গে সঠিক উপাচারে পূজা করলে যে কারও মুক্তিলাভ হয়। এছাড়া শিবলিঙ্গের দর্শন এবং ভক্তিভরে নমস্কার জানালেও অসীম কল্যাণ হয়। লিঙ্গপূজার নিয়মও খুবই সাধারণ। গঙ্গাজল আর বেলপাতাতেই শিব তুষ্ট। তবে বছরের শেষ সোমবার শিবলিঙ্গে আরও কিছু জিনিস অর্পন করা যেতে পারে। যেমন দুধ, দই, ঘি এবং মধু। এই কয়েকটি জিনিস দিয়ে শিবের অভিষেক করলে মনস্কামনা পূর্ণ হয়। এছাড়া বিশেষ উপাদান হিসেবে আখের রস দিয়ে শিবলিঙ্গ স্নান করানো যেতে পারে। এতে বিশেষ উপকৃত হতে পারেন শিক্ষার্থীরা। যে কোনও পরীক্ষায় সফলতা মিলবে এই কাজ করলে। তবে ভক্তিতে কোনও খামতি থাকলে চলবে না। মহাদেবের পুজোয় ওই একটিমাত্র উপাচার না থাকলে কোনও লাভ নেই। বলা ভালো, স্রেফ মহেশ্বর নন, দেবতা মাত্রেই ভক্তির কাঙাল। তাঁকে উপাচারের আড়ম্বরে ঢেকে ফেলা বোকামি। বছরের শেষ সোমবার শিবের পুজো সেরে কাউকে পেটভরে খাওয়ালে বিশেষ তুষ্ট হন মহাদেব। সামর্থ অনুযায়ী দান করলেও অবশ্যই বিশেষ ফল মেলে। একইসঙ্গে কোনও পশুপাখিকে কিছু খাবার দিলেও তুষ্ট হন মহেশ্বর।