গায়ের লোমগুলো নিয়ে বেশ একটু সমস্যায় ছিলাম। গিন্নি বলল, ডাক্তার দেখাও। পাড়ার ডাক্তারকে দেখালাম। গেঞ্জি খুললাম। বলল, ইউনিক কেস। এরকম কমই হয়। আমার মাসির একবার গোঁফ গজিয়েছিল, এন্ডোক্রিনোলজিস্টকে দেখিয়েছিলাম। উনি কিন্তু লেডি ডাক্তার। উনি হরমোন ট্যাবলেট দিয়ে ব্যাপারটা ম্যানেজ করে দিয়েছেন। আপনার কেসটাও হরমোন কেস। সেই ডাক্তারকে দেখাতে পারেন, যে মাসির গোঁফ রুখেছে, অথবা অন্য কাউকেও দেখাতে পারেন। কিন্তু এন্ডোক্রিনোলজিস্ট দেখাতেই হবে।
আমি আবার কোথায় এন্ডোক্রিনোলজিস্ট পাব? পাড়ার ডাক্তার যাকে দেখাতে বলল, তাকেই দেখাতে গেলাম। সঙ্গে গিন্নিও গেল। গেঞ্জি খুললাম। ওঁর চোখ একটু বড় বড় হয়ে গেল। যেন নাভির গভীর থেকে আসা ওংকার ধ্বনির মতো। বেরিয়ে এল, উরিব্বাবা। তারপর বললেন— কবে থেকে! সব বললাম। উনি বললেন, টেস্টোস্টেরন খুব বেশি বেরচ্ছে। একটা পার্সোনাল কথা জিজ্ঞাসা করতে পারি? ডাক্তারই তো পার্সোনাল কথা জিজ্ঞাসা করবে! তারই তো হক্! কিন্তু আমাকে নয়, গিন্নিকে জিজ্ঞাসা করলেন— এখন কি ইয়েটা বেড়েছে মনে হয়? মানে, দাম্পত্যলীলা?
গিন্নি শাড়ির আঁচলের কোনা মুখের কাছে টেনে বলল, কই, না তো? ডাক্তার দিদিমণি একটু চিন্তিত হলেন যেন। বললেন, সত্যি বলছেন তো, লজ্জা কী? আগের চেয়ে আজকাল একটু বেশি ইয়ে দেখান কি উনি? বুঝতে পারছেন তো কী বলতে চাচ্ছি!
গিন্নি বললেন— এতদিন স্বামী-ঘর করছি, এখনও বুঝব না কী বলতে চাচ্ছেন? তবে বললুম তো, বাড়ে-তো-নি, বরং…।
—ও আচ্ছা। টেবিলে স্টেথো ঠুকলেন দু’বার। বললেন, টেস্টোস্টেরন বেড়ে গেলে গায়ে রোম গজানো বাড়ে, সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় আরও কিছু।
ভাবি, এই রে! এবার আমার আরও কিছু দেখতে চাইবেন নাকি এই লেডি ডাক্তার? বড্ড লজ্জা করবে! ছোট বলেই।
না। আমাকে নয়, গিন্নিকেই জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়ে, মানে গোপনাঙ্গের সাইজটা কি বেড়েছে?
গিন্নি দু’বার মাথাটা এদিক-ওদিক করে বললেন— একদম নয়।
শারদীয় সংবাদ প্রতিদিন ১৪২৭-এ প্রকাশিত স্বপ্নময় চক্রবর্তী-র গল্প উল্টোরথ-এর নির্বাচিত অংশ।
লেখা: স্বপ্নময় চক্রবর্তী
পাঠ: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস