এই চিত্রনাট্যের কাহিনি ও সব চরিত্র কাল্পনিক। বাস্তবের কোনও ঘটনা বা চরিত্রের সঙ্গে কোনও মিল খুঁজে পাওয়া গেলে, সেটি অনিচ্ছাকৃত ও কাকাতালীয়।
সাংবাদিক: আররে কতক্ষণ থেকে বসে আছি। দুটো বেজে গেল। এভাবে কারও বসে থাকতে ভাল লাগে?
(সাংবাদিকদের সমবেত কণ্ঠ) এই এই এই এসে গেছে… এসে গেছে… স্যার…
মন্ত্রীমশাইয়ের প্রবেশ।
মন্ত্রীমশাই: আস্তে আস্তে… এত চিৎকার–চেঁচামিচির মধ্যে কথা বলা যায় নাকি? একটা গণতান্ত্রিক স্বচ্ছতা, একটা সুষ্্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে হবে তো! আমি কিন্তু একটা একটা করে প্রশ্নের উত্তর দেব। এমন ভাবার কোনও নেই যে আমার কাছে কোনও উত্তর তৈরি নেই। শুধু ধৈর্য ধরতে হবে ধৈর্য।
সাংবাদিক: স্যার, রাজনৈতিক হিংসা প্রচণ্ড বেড়ে গেছে রিসেন্টলি। তা এ ব্যাপারে আপনার কী মতামত?
মন্ত্রীমশাই: আহ্হা…! মতামত আবার কী দেব? আপনি যেটা বললেন, তার মধ্যেই তো উত্তর লুকিয়ে রয়েছে!
সাংবাদিক: মানে?
মন্ত্রীমশাই: মানে আপনি কী বললেন? আপনি বললেন যে, হিংসা প্রচণ্ড বেড়ে গেছে। তার মানে আগেও ছিল…
সাংবাদিক: অ্যাঁ, আগেও ছিল?
মন্ত্রীমশাই: আগে ছিল না? আপনি তো বলেননি যে শুরু হয়েছে, আপনি বলেছেন যে বেড়ে গেছে। তার মানে এটা আগেও ছিল। অর্থাৎ, এবার শুনুন ভাল করে… আমি তো এটাই বলছি যে ধৈর্য ধরতে হবে। আমার কথা শুনতে হবে। বুঝতে হবে। পৃথিবীর মানুষের, মানে, এটা সিভিলাইজেশনের একটা অসুখ। সাইকোলজিক্যাল সমস্যা।
সাংবাদিক: সাইকোলজিক্যাল?
মন্ত্রীমশাই: হ্যাঁ! সাইকোলজিক্যাল না? মানে, মানুষ অধৈর্য হয়ে যাচ্ছে। হিংসুটে হয়ে যাচ্ছে মানে কী? অধৈর্য হয়ে যাচ্ছে, ক্ষেপে যাচ্ছে। গোড়াতেই আমি বলেছিলাম, ধৈর্য ধরতে হবে। বুঝেছেন তো?
সাংবাদিক: এই মরেছে! কিন্তু স্যার, সরকারের তো একটা ইনিশিয়েটিভ নেওয়া উচিত। রাজনৈতিক হিংসা–হাঙ্গামা এইসব থামানোর ব্যাপারে আপনারা কী ভাবছেন স্যার?
(সাংবাদিকদের সমবেত কণ্ঠ) কী ভাবছেন স্যার? কী ভাবছেন স্যার?
মন্ত্রীমশাই: ভাবব কেন? ওসব আগে যারা সরকারে ছিল তারা ওইসব করত, ভাবত। সারাদিন ভাবছে। কাজের নাম নেই, সারাদিন ভাবছে! আমরা কী করছি? আমরা ভাবছি, কাজ করছি, ভাবছি, কাজ করছি, সাইম্যালটেনুয়াসলি একসঙ্গে করে যাচ্ছি। যেমন আমরা প্রতিটি জনসভাতে প্রত্যেকটি দলীয় কর্মীর কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছি যে, মারদাঙ্গা, ক্যালাকেলি, গাঁ…
(পাশ থেকে কেউ মন্ত্রীকে শুধরে দেন): এই স্যার স্যার স্যার স্যার! কন্ট্রোল…
মন্ত্রীমশাই: …হ্যাঁ, মানে এসব চলবে না। (ফিসফিসিয়ে) আহ্! তুমি চুপ করো তো!…
তারপর? শুনুন…
লেখা: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
পাঠ: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়, কোরক সামন্ত, মৌমিতা সেন ও সুশোভন প্রামাণিক
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস