দেশের ৯০ শতাংশ মানুষই মুসলিম। তাই সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি মোছা হোক। চাইছেন বাংলাদেশের বাসিন্দারা। সম্প্রতি সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবও দিয়েছেন সে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল। ঠিক কী দাবি প্রশাসনের? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এতদিন এমনটাই উল্লেখ ছিল বাংলাদেশের সংবিধানে। যা নির্দেশ করত, দেশের সকল নাগরিক যে কোনও ধর্ম অনুসরণ করে চলতে পারেন। কিন্তু এবার সেই নিয়মে বদল আসুক। চাইছে প্রশাসন। সায় রয়েছে বাসিন্দাদেরও।
আরও শুনুন:
কোটা আন্দোলনে শহিদ, পরীক্ষা হলে ‘ফুল’ হয়ে সহপাঠীদের পাশে বাংলাদেশের ছাত্র
চলতি বছরের মাঝামাঝি নতুন করে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। গণ অভ্যুত্থানের জেরে প্রধানমন্ত্রীর গদি হারিয়েছেন শেখ হাসিনা। নোবেলজয়ী ইউনুস খানের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রশাসনের অন্দরমহলে বদল হয়েছে একাধিক। এবার পালা সংবিধানের। সম্প্রতি বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামান, এমনই প্রস্তাব এনেছেন। তবে সম্পূর্ণ সংবিধান নয়। তাঁর আপত্তি স্রেফ ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি নিয়ে। অবিলম্বে তা বদলানোর আরজি জানিয়েছেন আসাদুজ্জামান। নেপথ্যের কারণ হিসেবে বাংলাদেশের বাসিন্দাদের নির্দেশ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, বর্তমানে ওপার বাংলার ৯০ শতাংশ বাসিন্দাই মুসলিম। তাই অন্য কোনও ধর্মের কথা সংবিধানে প্রয়োজন নেই। সেই প্রসঙ্গ ধরেই সংবিধান বদলের কথা বলেছেন তিনি। তবে স্রেফ এতটুকু নয়, আদালতে এ প্রসঙ্গে আলোচনার সময় আরও কিছু কারণ উল্লেখ করেছেন তিনি।
আরও শুনুন:
নতুন সরকার, কোন খাতে গড়াবে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক?
তাঁর দাবি, বাংলাদেশের সংবিধানের শুরুতেই আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও ভরসার কথা বলা হয়েছে। এরপর আর্টিকেল ২-এ ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে। যে কেউ যে কোনও ধর্ম অনুসরণ করে চলতে পারে। সংবিধানের ওই ধারায় এমনটাই স্পষ্ট করা আছে। আবার আর্টিকেল ৯-এ বলছে বাঙালি জায়তীয়তাবাদের কথা। আসাদুজ্জামান মনে করছেন, এই দুই ধারা একে অন্যের পরিপন্থী। পাশাপাশি জনসংখ্যার অধিকাংশই মুসলিম, এই বিষয়টাও রয়েছে। আবার সংবিধান সংশোধনের কথা সে দেশের সংবিধানেই উল্লেখ রয়েছে, এমনটাও উল্লেখ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে আদালতে। তবে এখনও রায়দান হয়নি। আসলে, ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের সব দেশেই কমবেশি আলোচনা হয়। তালিকায় ভারতও রয়েছে। তবে সম্পূর্ণভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা বদলে ফেলার দাবি ওঠেনি কোথাও। বাংলাদেশের নতুন সরকার সেই পথেই হাঁটছে।