‘এসব কথা শুন্লে তোদের লাগবে মনে ধাঁধা,
কেউ বা বুঝে পুরোপুরি, কেউ বা বুঝে আধা।’
ধাঁধা তো লাগবেই মশাই। আকাশে এরোপ্লেন উড়তে শুনেছেন, মহাকাশে রকেটও; কিন্তু শিঙাড়া উড়তে শুনেছেন কস্মিনকালেও? সেই অবাস্তবই বাস্তব হয়েছে। না, নাসা, ইসরো বা দেশ–বিদেশের কোনও মহাকাশ সংস্থার হাত ধরে নেয়, মহাকাশে শিঙাড়া পাঠিয়েছেন এক রেস্তোরাঁর মালিক। তাও আবার কি না ভারতীয়! করোনাকালে যেখানে বিশ্বময় আন্তর্জাতিক উড়ান প্রায় বন্ধ, সেখানে মানুষ নয়, শিঙাড়া সেরে আসছে মহাকাশ সফর! ভাবা যায়?
আজ্ঞে হ্যাঁ! প্যানডেমিক পর্বে দোকানে বিক্রিবাটা কম। পরিচিত এবং সচল দোকান হলেও কম। উদাস কর্মীরা। তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতেই অভিনব উদ্যোগ নিলেন রেস্তোরাঁর মালিক। মহাকাশে পাঠালেন নিজের রেস্তোরাঁর শিঙাড়া!
না না, কোনও কমিক স্ট্রিপ বা অ্যানিমেশন নয় মশাই, ‘রিল’–ও নয়, এক্কেরে ‘রিয়াল’। ঘটনাটি ঘটেছে ইংল্যান্ডের বাথ–এর এক ভারতীয় রেস্তোরাঁয়। ঘটিয়েছেন নীরজ গাধের। ‘চায়ওয়ালা’–র মালিক নীরজ। ইংল্যান্ডের অন্যতম বিখ্যাত ভারতীয় রেস্তোরাঁ এই ‘চায়ওয়ালা’। ছোট–বড়–মেজ–সেজ–ন’–ফুল––– সমস্ত রকম চা–খোরদের স্ন্যাক্স প্যারাডাইস রেস্তোরাঁটি। ২৪ ঘণ্টা ৭ দিন লেগেই থাকে দেশি–বিদেশিদের ভিড়। হলে কী হবে? অতিমারির বাজারে বিক্রিবাটায় টান পড়েছে। তাই কর্মীদের চিয়ার আপ করতে কোনও কসুর ছাড়েননি নীরজ। ‘মেড বাই ইন্ডিয়ানস, পেয়ারা সামোসা’ পাঠিয়ে দেন স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে। মহাশূন্যে ট্রাভেল করে বেরয় শিঙাড়াটি। তারপর কী হয়? আর এমন আশ্চর্য ঘটনাটা ঘটেই বা কীভাবে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
প্রথমে তো কর্মীদের কাছে ছ্যাবলামো মেরেই প্রস্তাবটি রেখেছিলেন নীরজ: লোকে স্পেসে রকেট ওড়ায়, আমরা শিঙাড়া ওড়াব, চমকে দেব পৃথিবীকে। পরে হঠাৎ তাঁর মনে হল, আইডিয়াটা নেহাত মন্দ নয়! ওড়ালেই হয়। মজার ছলে নেওয়া উদ্যোগটা কোনওমতে সফল হলে কর্মচারীরাও রিল্যাক্স হন একটু।
আইডিয়া ফলপ্রসূ করতে নীরজ শোকেস থেকে তুলে নেন তাঁর ‘বিলাভেড স্ন্যাক্: সামোসা’। হিলিয়ামভরা হাওয়া–বেলুনে ভরে তা ওড়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ফার্স্ট অ্যাটেম্পটে কি আর সবসময় ‘উৎক্ষেপণ’ সফল হয় মশাই?
তারপর শুনুন…
লেখা: সোহিনী সেন
পাঠ: সুশোভন প্রামাণিক
আবহ: শুভাশিস চক্রবর্তী