মহাশূন্যে টুকরো টুকরো জিনিসও ম্যাটার করে। ভেসে থাকতে প্রতিবার ২৫০০ ক্যালোরির বেশি খাবার খেতে পারবেন না নভশ্চররা। দিনে বড়জোর তিনটে মিল। সেই মেনেই খাদ্যের পুষ্টিগুণ ও সুষমতার দিকটি মাথায় রাখা হয়েছে বলে জানায় ডিএফআরএল। পুরো মেনুই মহাকাশ উপযোগী ডায়েটযুক্ত। নির্ধারিত মেনুর সবটাই ঠিক হয়েছে ‘ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন’ তথা ইসরো–র সঙ্গে আলোচনা মোতাবেক।
নাসা–র মিশনগুলিতে মার্কিন মহাকাশচারীদের জন্য বরাদ্দ থাকে স্থানীয় খাবারদাবার। মহাকাশে ভাসতে ভাসতে তাঁরা দিব্য চিবতে পারেন পাইনাপেল কেক, পিচ, চকলেট পুডিং। ব্রেকফাস্টে দুধ সহযোগে সিরিয়াল তো রয়েইছে। এছাড়াও টুকটাক খিদে মেটানোর জন্য থাকে চকলেট ব্রাউনির মতো লোভনীয় সব আইটেম। এখানেই শেষ নয়। ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে তো ছোটখাট একটা দোকানই রয়েছে পিৎজা, স্মোকড টার্কি, ক্যান্ডিড ইয়াম, সুন্দরভাবে ড্রেসিং করার কর্নব্রেড ইত্যাদির। রুশ নভচররাও মহাকাশে উদরপূর্তি করেন তাঁদের দেশীয় খাবার দিয়ে। লিস্টে থাকে: হরেক রকমের সুপ, ল্যাম্ব উইথ ভেজিটেবলস, বিফ টাং উইথ অলিভ, কটেজ চিজ–সহ ৪০০টার মতো ডিশ! জাপানি মহাকাশচারীরা সুশি, র্যামেন, ইয়োকান দিয়ে পেটপুজো করেন। ইউশিয়াং পর্ক, পাও চিকেন, হার্বাল টি সহযোগে লাঞ্চ–ডিনার সারেন চিনা নভচররা। মোদ্দা কথা, প্রতিটি দেশ মহাকাশে তাঁদের নিজস্ব কুইজিন ক্যারি করে। তাহলে ভারতই বা কেন বাদ যাবে? কেন মহাকাশে থাকবে না ভারতীয় খাদ্য–সংস্কৃতির একটা অংশ? কেন আমাদের দেশের মানুষ ঘরের হেঁশেল বানানো খাবারের স্বাদ পাবেন না মহাকাশেও? এইসব ভাবনা থেকেই ইসরো ও ডিএফআরএল–এর এই অভিনব উদ্যোগ।
গগনযানীদের ফুড কিট হবে স্পেসফ্লাইট উপযোগী। সবটাই রেডি টু ইট। মূল পদের প্যাকেটগুলি ১০০ থেকে ২০০ গ্রামের। কিটে থাকবে একটি বিশেষ স্ট্র। ডিএফআরএল–এর ভাষায় ‘লিকুইড ডেলিভারি সিস্টেম’। মহাশূন্যে পানীয় পান করা সমস্যার। সেই সমস্যা কাটাতেই বিশেষভাবে তৈরি হচ্ছে স্ট্র–টি যাতে ইন্সট্যান্ট কফি অথবা চা–পানে অসুবিধা না হয়।
তারপর?
শুনুন…
লেখা: সোহিনী সেন
পাঠ: সুশোভন প্রামাণিক
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস