শুনুন এক আশ্চর্য ‘টাইম-ট্রাভেল’, ইন্দ্রনীল সান্যাল-এর কলমে, দেবশঙ্কর হালদার-এর কণ্ঠে।
পাঠ হওয়া গল্পটির নির্বাচিত অংশ রইল নিচে।
গাইডের নাম ওলেক। বছর পঁচিশের ছেলেটি পরে আছে কমিউনিস্ট জমানার শ্রমিকের অভারঅল। যে গাড়ি চড়ে যাওয়া হবে সেটির নাম ‘ট্রাবান্ট’। সেই সময়ের সাধারণ মানুষের গাড়ি।
………
টাউন স্কোয়্যারে গাড়ি থামিয়ে ওলেক বলল, “নোয়া হুটায় আপনাদের স্বাগতম কমরেডস! ‘নোয়া’ মানে নতুন। ‘হুটা’ মানে ইস্পাত কারখানা। ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত কারখানার জন্যই এই জায়গার নাম ‘নোয়া হুটা’। অতীতে টাউন স্কোয়্যারের নাম ছিল ‘লেনিন স্কোয়্যার’ আর কারখানার নাম ছিল ‘ভ্লাদিমির লেনিন স্টিল ওয়ার্ক’।”
অতীতে নাম ছিল মানে? ‘ছিল’-র ওপরে জোর দিয়েছেন অশোক, ‘এখন কী নাম?’
ওলেক কিছু বলার আগে মনোজ বললেন, ‘ভাই ওলেক! বকরবকর বন্ধ করে কিছু খাওয়াও দেখি’।
‘শিওর কমরেডস!’ গাড়ি থেকে নেমে পিছনের দরজা খুলে ওলেক বলল, ‘ওয়েলকাম টু সোশ্যালিস্ট ক্যাফে!’
ক্যাফে থেকে বেরিয়ে এসেছে লাল পতাকা হাতে, শ্রমিকের ওভারঅল পরা দুটি মেয়ে। তারা চিৎকার করে পোলিশ ভাষায় কমিউনিস্ট অভিবাদন জানাল। পাশ থেকে ওলেক বলল, ‘আপনাদের সোশ্যালিস্ট হিরোর ওয়েলকাম জানানো হচ্ছে’।
‘বাঃ!’ অশোক খুশি হয়ে ক্যাফের চেয়ারে বসলেন। মেয়ে দুটি তাঁর এবং মনোজের হাতে তুলে দিল চকোলেট। অশোক বললেন, ‘এটা কী ব্যাপার?’
মনোজ বললেন, ‘শ্রমিক শ্রেণি যাতে ভদকার থেকে দূরে থাকে, তার জন্য সোশ্যালিস্ট ক্যাফেতে মিল্কবার পাওয়া যেত।’
চকোলেটে কামড় দিয়ে অশোক বললেন, ‘চমৎকার খেতে!’
চকোলেট শেষ হওয়ার পর ওলেক বলল, ‘চকোলেট খেয়ে কি আর শ্রমিক শ্রেণির আশ মেটে? তারা ভদকার জন্য লাইন দিত। সেই ট্র্যাডিশন স্মরণ করে এবার ভদকার জন্য লাইন দিতে হবে’।
‘ভদকার জন্য লাইন?’ অশোক অবাক।
ওলেক বিনয়ের সঙ্গে বলল, ‘এটা টাইম ট্রাভেল কমরেডস! সেই সোনালি দিনগুলোতে কিছুক্ষণের জন্য ফেরত যাওয়া। তখন ভদকা বা রুটির জন্য লাইন দিতে হত। অবশ্য আপনারা ভিআইপি কমিউনিস্ট। চাইলে এখানে বসেই ভদকা পেতে পারেন’।
লেখা: ইন্দ্রনীল সান্যাল
পাঠ: দেবশঙ্কর হালদার
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস