মোল্লা সাহেবের বিবি গিয়েছেন দূর দেশে, তাঁর এক আত্মীয়ের বাড়ি। মোল্লা সাহেব বাড়িতে একাই আছেন। তাই সকালবেলা উঠে তিনি ঠিক করলেন যে আজ আর হাত পুড়িয়ে রান্নাবান্না নয়, দুপুরের রান্নাবান্না সারবেন নগরের কোনও নামী সরাইখানাতে। যেমন ভাবা, তেমনই কাজ।
মোল্লা সাহেবের সরাইখানাতেই যখন যাব তখন নগরের পশ্চিমে আবদুল কাসেমের যে মস্ত সরাইখানাটা রয়েছে, ওখানেও যাই। খরচাপাতি অন্য জায়গার তুলনায় একটু বেশি হবে অবশ্য, তা হোক গে। ওখানে শহরের সব রইস আদমিরা আসেন। খাবারের স্বাদও সেরকম! ওখানে খাওয়ার মজাই আলাদা!
মোল্লা সাহেব ঘোড়ার গাড়িতে করে সরাইখানা হাজির। আজ আবার অন্যদিনের তুলনায় ভিড় একটু বেশিই যেন। মোল্লা সাহেব উঁকি দিয়ে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করলেন।
মোল্লা সাহেব: হায় আল্লা! এ তো অবিশ্বাস্য ভিড়! সরাইখানার ওই কোণে অনেক লোক জমায়েত হয়েছে। কেন? ও, এইবার বুঝেছি। ওই টেবিলে…হুম…যা ভেবেছি তাই…দশাসই চেহারার প্রাক্তন সৈনিকগুলো এসেছে।
জনৈক: আরে মোল্লা সাহেব যে! এদিকে আসুন! শুনে যান শুনে যান ওইসব সাংঘাতিক কাণ্ড!
মোল্লা সাহেব: সাংঘাতিক কাণ্ড? মানে?
জনৈক: আরে সাংঘাতিক কাণ্ড মানে এই এঁরা… সৈনিকরা যুদ্ধক্ষেত্রে কী সব লড়াই করেছেন। তার সব গল্প শুনছি আর কী।
বাকিরা: আসুন আসুন মোল্লা সাহেব!
জনৈক: এঁরা হচ্ছেন বীর সৈনিক জং জয়নাল বাহাদুর আর সেলিম ভাই।
মোল্লা সাহেব: আসসালাম আলাইকুম
জয়নাল: আলাইকুম আসসালাম
মোল্লা সাহেব: শুনলাম, আপনারা বীর সৈনিক! তা ভালই তো, খাবার খেতে খেতে আপনাদের যুদ্ধক্ষেত্রের কাহিনি শোনা যাবে।
জয়নাল: মোল্লা সাহেব, শুনতে ভাল লাগে ঠিকই, তবে সামনে থাকলে বোঝা যায় কী কঠিন পরিস্থিতি!
জনৈক: একটু খুলে বলুন না জয়নাল সাহেব।
জয়নাল: তবে একটু খোলসা করেই বলি কী বলুন? যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই তখন তুঙ্গে। আমি খোলা তলোয়ার নিয়ে ঘোড়ার পিঠে চড়ে এগিয়ে চলেছি। পিছন থেকে ঘটাং করে একটা শব্দ হল!
তারপর?
শুনুন…
লেখা: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
পরিচালনা: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
পাঠ: কোরক সামন্ত, শঙ্খ বিশ্বাস, সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস