আনপজড– অর্থাৎ? কন্টিনিউড? থামার বিপরীতে চলা?
স্তব্ধতার বদলে চলমানতা?
কীসের স্তব্ধতা? কীসেরই বা চলমানতা?
স্তব্ধতা কীসের, ২০২০–র ডিসেম্বরে বসে আলাদা করে নিশ্চয়ই বলে দেওয়ার দরকার পড়ে না। কোভিড-১৯, লকডাউন, দুনিয়াজোড়া মৃত্যুমিছিল– স্তব্ধতা যে আসলে কী, এই ক’দিনে তা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যাচ্ছে। কেউ দাঁতে দাঁত চেপে নিজের মতো মানিয়ে নিয়েছি, নিচ্ছি; কেউ পারছি না বা পারিনি। খবরের কাগজে, টেলিভিশনে, ইন্টারনেটে, সোশ্যাল মিডিয়ায় জীবন সংগ্রামে অনেকের সেই অন্তিম হেরে যাওয়া দেখেছি আমরা। দীর্ঘশ্বাস ফেলেছি।
আর চলমানতা? ব্যাপারটা গোলমেলে। কারণ মাস দুয়েক লকডাউনের পরেই বিশ্বব্যাপী এমন এক হইহই চালু হয়েছে যেন সব স্বাভাবিক, যেনতেন প্রকারে সবকিছু চালিয়ে নিতেই হবে! মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগে অনলাইন নির্ভরতার জন্য প্রয়োজনীয় যে–পুঁজি, তার জোগান থাক বা না থাক, চলতে আপনাকে হবেই! জোর করে প্রায় বাধ্য হয়ে চলমানতার গল্পের পাশাপাশি আরেকরকম চলমানতাও এই ক’দিনে আমাদের অভিজ্ঞতায় এসেছে। মানবতার চলমানতা, ভালবাসার চলমানতা। পরস্পরকে সামান্য ছুঁয়ে থেকে বেঁচে থাকতে চাওয়ার চলমানতা। প্রবল সংকটের মুখেও আরেকটা মানুষের পাশে একটুখানির জন্য হলেও থাকা। কাঁধে হাত ছুঁইয়ে বলা: ‘তুমি পারবে’। এইটুকু চলমানতাও অনেক সময় স্তব্ধতা আর বদ্ধতার সঙ্গে লড়াই করার জন্য জরুরি হয়ে ওঠে।
সদ্য ‘আমাজন প্রাইম’–এ মুক্তি পাওয়া পাঁচটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের কাহিনি নিয়ে তৈরি ‘আনপজড’ এমনই বিভিন্ন পরিসরে বিপন্ন মানুষের চলমানতার গল্প বলে। গল্প বলে হেরে যেতে যেতে অপর কোনও মানুষকে পাশে পেয়ে যাওয়ার যা এই স্তব্ধতার সময় কতটা জরুরি আমরা সবাই আঁচ করেছি।
বলিউডে পরিচালক হিসাবে খুব পরিচিত নন, এমন ছয় নির্দেশকের বানানো পাঁচটি গল্প, যার আপাত সংযোগসূত্র কোভিড-১৯।
ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের, বিভিন্ন ধর্মের এবং বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ কীভাবে কোভিড-১৯-এর এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, তা নিয়েই ‘আনপজড’। পাঁচটি গল্প: ‘গ্লিচ’, ‘অ্যাপার্টমেন্ট’, ‘র্যাট-এ-ট্যাট’, ‘ভিশানু’, ‘চাঁদ মুবারক’; যথাক্রমে রাজ–ডিকে, নিখিল আদবানি, তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়, অভিনাশ অরুণ এবং নিত্যা মেহরার পরিচলনায়।
কেমন হল ছবিটি! শুনুন…
লেখা: সায়ন্তন দত্ত
পাঠ: কোরক সামন্ত
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস