সুন্দরীদের দেখে মাথা ঘামাতেন না বিশেষ। বিছানায় কে ভাল, কে বেশি সুখ দেয়––– তা–ই ছিল তাঁর একমাত্র ভাবনার বিষয়। বরাবর বিশ্বাস করে এসেছেন, ‘ইফ শি ইজ নট লাইভলি ইন বেড, দেন দেয়ার ইজ নো পয়েন্ট!’ বার্ধক্যেও নিজের এই বিশ্বাসে অটল ছিলেন লেখক–কূটনীতিবিদ–রাজনীতিক–সাংবাদিক খুশবন্ত সিং। বেঁচে থাকলে ১০৬–এ পড়তেন চিরযুবা মানুষটি। কেমন ছিল বৃদ্ধ বয়সের সেই জ্বলজ্বলে তারুণ্য? জানাচ্ছেন রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়।
পঁচানব্বই পেরিয়ে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত বলেছেন আমার ‘সান–ডাউনার’ চাই–ই চাই। জীবনের শেষ সূর্যাস্তকেও উইশ করেছেন স্কচ–হুইস্কিতে চুমুক দিয়ে। বলেছিলেন, পৃথিবী থেকে বিদায়ের সময় কয়েক ফোঁটা স্কচ দিও আমার মুখে।
আর কোন ভারতীয় মদ খাওয়ার আনন্দ ও পুণ্যতাকে এইভাবে জীবনব্যাপী মহোৎসবে পরিণত করেছিলেন খুশবন্ত সিং ছাড়া?
একদিকে মদের উৎসব, অন্যদিকে যৌনতার। যখন অতীব বৃদ্ধ তিনি, দিনরাত শুধু ওষুধ খেতে হয় ধড়ে প্রাণ রাখার জন্য, তখনও সন্ধে হলেই তাঁর সামনে আসে তাঁর বেঁচে থাকার প্রধান সুখ: স্কচ।
তাঁর বেঁচে থাকার আরও এক সুখ: নারী। তিনি নিজেই লিখেছেন তাঁর শেষ বই ‘অ্যাবসোলিউট খুশবন্ত’–এ, ‘এখনও দুষ্টু দুষ্টু স্বপ্ন দেখি।’
তিনি লিখছেন, ‘মাই হার্ট ইজ স্টিল ইয়ং। দিল বদমাশ হ্যায়। বুরে বুরে খায়াল আতে হ্যায়––– আই ফ্যান্টাসাইজ।’ আমার মনের মধ্যে এখনও জ্যান্ত আছে সেই শয়তান। কারণ আমি বৃদ্ধ হয়েও তরুণ আছি। এখনও মনের মধ্যে খেলা করে অসভ্য সব ভাবনা। বেশ লাগে আমার। নারীকে নিয়ে কতরকমের দিবাস্বপ্ন দেখি!
তবে বুড়ো হওয়ার পর একটা তফাত হয়েছে। যখন বয়স কম ছিল, তখন যা স্বপ্ন দেখতাম, তা–ই করতাম। এখন শুধু স্বপ্নই দেখি। তবে দুষ্টু ভাবনার উপর তো কোনও সেন্সরশিপ নেই। নেই কোনও বাধা–দ্বিধা–কুণ্ঠা। যা খুশি দিবাস্বপ্ন দেখি। মজায় আছি।
আর কোনও ভারতীয় সেক্স নিয়ে এমন খোলামেলা লেখার সাহস দেখাতে পারবেন? তুলে ধরতে পারবেন নিজের ব্যক্তিগত জীবন এইভাবে?
লিখছেন খুশবন্ত: ‘পুরুষের বয়স বাড়লে তার যৌন–তাড়না কুঁচকি থেকে মাথায় ওঠে! কম বয়সে সে যা করতে চেয়েও করতে পারেনি, মনে মনে বৃদ্ধ বয়সে সেইসব কাজ করতে থাকে। সেটা বেশ আনন্দের ব্যাপার।’
খুশবন্ত লিখছেন জীবনপ্রান্তে: ‘নারী–পুরুষের সম্পর্কে রোমান্সের চেয়েও সেক্সেরই গুরুত্ব বেশি। রোমান্স হচ্ছে আলগা জেল্লা। টিকে থাকে না। ক্ষয়ে যায়। যৌনতা টিকে থাকে। ওটা চিরকালের। শরীরের ক্ষমতা কমলেও যৌন তাড়না থেকেই যায়। সেই জন্য আমি রোমান্সকে পাত্তা দিইনি। রোমান্স করে সময় নষ্টও করিনি। ফর মি সেক্স ইজ মোর ইমপরট্যান্ট।’
আর? শুনুন…
লেখা: রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
পাঠ: সুশোভন প্রামাণিক
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস