স্বামী বিবেকানন্দ‘র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সংবাদ প্রতিদিন রোববার’ পত্রিকার ‘সন্ন্যাস’ সংখ্যা প্রকাশ পায়। সেই সংখ্যায় শংকর–রচিত প্রবন্ধের নির্বাচিত অংশ।
এদেশের ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ ইদানিং ‘স্বনির্ভর ভারত–সৃষ্টি’ প্রসঙ্গে বিবেকানন্দ–অভিমত ঘেঁটে দেখছেন। যাঁরা শুরু হওয়ার আগেই হতাশ হয়ে পড়েন, তাঁরা কি জানেন––– ঘর–সংসার ২৩ বছরে ত্যাগ করে যিনি ভিক্ষের ঝুলি ধারণ করেছেন, তিনি কী বলতে পারেন বহুজাতিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের জটিল–পরিচালনার মন্ত্র নিয়ে?
স্বামীজি তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনকালে এদেশের ধনপতিদের অর্থসাহায্য সংগ্রহ করতে পারেননি, অথচ মানবমঙ্গলের জন্য অর্থের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। এই অর্থ সংগ্রহের খোঁজেই তিনি অজানা বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন।
কেউ কেউ জানতে চান, শুধু কি রাজারাজড়া, না ‘বিগ বিজনেস’–এর সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল? সবচেয়ে বেশি যাঁর সঙ্গে তাঁর নৈকট্য ছিল, তিনি খেতড়ির মহারাজ হলেও সম্পদে ক্ষুদ্র ছিলেন। তিনিই স্বামীজির জাহাজের টিকিট আপগ্রেড করে ফার্স্ট ক্লাসে উঠিয়ে দিয়েছিলেন। তিনিই তাঁর ব্যক্তিগত সচিবকে মুম্বই বা তৎকালীন বোম্বাইয়ের জাহাজঘাটা পর্যন্ত পাঠিয়েছিলেন। তিনিই বিদেশে বিবেকানন্দের সাজগোজ কী হবে, তা আন্দাজ করে মুনশি জগমোহনলালকে নির্ভয়ে কিনতে নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং স্বামীজি তাঁকেই অনুরোধ করেছিলেন, কলকাতায় তাঁর গর্ভধারিণীকে তাঁর অনুপস্থিতিকালে কিছু অর্থসাহায্য করতে।
নিচু ক্লাসে না–গিয়ে উঁচু ক্লাসের যাত্রী হওয়ার কারণ অবশ্যই স্বামীজির পেটের গন্ডগোল এবং ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন। কিন্তু উঁচু ক্লাসের যাত্রী আরেক স্মরণীয় সুবিধা তিনি পেয়েছিলেন। ‘ইয়োকোহামা হইতে স্বামীজি কানাডিয়ান প্যাসিফিক রুটের এমপ্রেস অফ ইন্ডিয়া নামক জাহাজে উঠিলেন। ওই জাহাজে দুইজন ভারতীয় সহযাত্রী ছিলেন––– একজন জামসেদজি নসরভনজি টাটা ও অপরজন লালুভাই। জাহাজ ১৪ জুলাই ইয়োকোহামা ত্যাগ করে। কানাডার বঙ্কুবর থেকে বহু নদনদী, বনানী, নগর অতিক্রম করিয়া ট্রেন ছুটিল এবং উইনিপেগ হইয়া ৩ জুলাই ১৮৯৩ রাত্রি সাড়ে দশটায় তিনি শিকাগো নগরে উপস্থিত হইলেন।’
জামসেদজি টাটার সঙ্গে সন্ন্যাসীর পরিচয় কীভাবে? স্বামী চেতনানন্দের অনুমান স্বামীজি যখন জাপানের দেশলাই কারখানা দেখতে যান, সেখানেই টাটার সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয়।…
স্বামীজির আরেক মস্ত ভক্ত, বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক ও আবিষ্কারক নিকোলা টেসলা (১৮৫৬–১৯৪৩)। এই বিখ্যাত চিরকুমার আবিষ্কারক একসময় আর এক বিখ্যত আবিষ্কারক টমাস আলভা এডিসনের সঙ্গে কাজ করেছেন।…
টমাস আলভা এডিসনের আবিষ্কৃত যন্ত্রে স্বামীজির কণ্ঠস্বর রেকর্ড হয়েছিল এবং সেই কণ্ঠস্বর তিনি কয়েকজনের কাছে উপহার পাঠিয়েছিলেন।
শুনুন…
লেখা: শংকর
পাঠ: শঙ্খ বিশ্বাস
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস