‘তিব্বতে টিনটিন’–এর সেই শেষ দৃশ্য মনে পড়ে? পর্বতের পাদদেশ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে টিনটিন–ক্যাপ্টেন–কুট্টুস–সহ অভিযাত্রীদের বিশাল দল। আর ওইইইইইই পিছনে এককোণে পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে তাদের চলে যাওয়া দেখছে ইয়েতি। সেই ইয়েতি, যার অস্তিত্ব নিয়ে আপামর বিশ্ববাসীর বুকের মধ্যে টলতে থাকে ‘হ্যাঁ’ ও ‘না’–এর দোদুল্যমান শিকারা। ঠিক যেমন সান্তা ক্লজের ক্ষেত্রে।
সান্তা দাদু কি সত্যিই আছেন? আমাদের চারপাশে না–থাকলেও অন্তত বিশ্বের কোনও প্রান্তে? নাকি যুদ্ধ–রক্ত–ক্ষুধাদীর্ণ পৃথিবীর বুকে তিনিও এক ইউটোপিয়ান ম্যাসকট; যাঁকে দেখা যায় না, যাঁর রেপ্লিকারা প্রতিনিধি স্বরূপ ভাগ্যক্রমে আমাদের কাছে এসে পৌঁছন? ধরি ধরি মনে করি, ধরতে গেলে আর পেলেম না… মোটা তুলোর বর্ডার দেওয়া চড়া লাল শীতবস্ত্র, মাথায় একইরকস টুপি, গোলমতোন চশমা, আর ইয়া তাগডড়া সাদা গোঁফের তলায় ততোধিক তাগড়া পেল্লাই হাসি।
‘সান্তা ক্লজ’ উচ্চারিত হলে আমাদের মানসপটে মোটামুটি এই ছবিটাই ফুটে ওঠে। গ্রিটিং কার্ড থেকে ওয়াল পেপার থেকে ফ্রিজ ম্যাগনেট থেকে টি–শার্ট… সর্বত্রই এই একই ছবি। ক্রিসমাসের আগের রাতে তাঁর ভরসায় মোজা ঝোলালে কিছু না কিছু প্রাপ্তি ঘটেইছে। কে–কখন–কীভাবে দিয়ে গেল, এই প্রশ্ন রাখিনি আমরা। শিশুর সারল্যে দৈত্যাকার দাড়িবুড়ো উপস্থিতি মেনে নিয়ে নমো নমো করে গিফট খুলেছি।
করোনা আবহে সারা বিশ্ব থেকে চিঠি গিয়েছিল তাঁর কাছে। বলা বাহুল্য, অধিকাংশ শিশুদেরই। কেউ চিঠি পাঠিয়েছে, করোনার ভ্যাকসিনকে উপহার হিসাবে চেয়ে। কারও আবদার অতিমারী ঝকঝকে নতুন একটা বছর, কেউ আবার চিন্তিত– তার দাদু–দিদাকে বাড়ি থেকে বেরতে দেওয়া হয় না, সান্তা দাদু স্লেজগাড়ি টেনে আসবেন কী করে? ওই বিরাট মুখে কোথায়ই বা লাগাবেন মাস্ক? এয়ারপোর্ট, কোয়ারেন্টিনের ঝক্কি সামলে ঠিকঠাক পৌঁছতে পারবেন তো তাদের পাড়ায়?
কিন্তু কে এই সান্তা, ছর্রার মতো সারা বিশ্ববাসীর মুখে হাসি ফোটান যিনি? কোত্থেকে এল দ্য ফেমাস সান্তা ক্লজ ও তাঁর এমনতর পোশাকের ধারণা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
লেখা: সোহিনী সেন
পাঠ: সুশোভন প্রামাণিক
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস