অ্যালবার্ট আইনস্টাইন-এর প্রথম স্ত্রী: মিলেভা। মিলেভার সঙ্গে আইনস্টাইনের দেখা হল কীভাবে? বিজ্ঞান ঘটাল এই দেখা-হওয়া। দু’জনেই জুরিকের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রছাত্রী। মিলেভা কিন্তু আইনস্টাইনের থেকে চার বছরের বড়। মিলেভার সঙ্গে অ্যালবার্টের বন্ধুত্ব তাই দু’চক্ষে দেখতে পারতেন না অ্যালবার্টের মা। বলতেন ছেলেকে, ‘তোর যখন তিরিশ হবে, মিলেভা তো তখন বুড়ি!’ কিন্তু মিলেভা ছাড়া আইনস্টাইনের চলত না। অঙ্ক বা বিজ্ঞান– যা কিছুই মাথায় সহজে ঢুকত না আইনস্টাইনের, তা-ই জলের মতো সহজ করে দেন মিলেভা। মিলেভাকে লেখা একটি চিঠিতে– মিলেভা, ভাগ্যিস তুমি আছ আমার জীবনে, তাই লেখাপড়াটা কত সহজ হয়ে গিয়েছে আমার পক্ষে।
কিন্তু আইনস্টাইনের সঙ্গে বিয়েই মিলেভার জীবনে ডেকে আনল আঠারো বছর ধরে যন্ত্রণার নরক! যখন এই বিয়ে ভাঙল, মনের দিক থেকে পুরোপুরি ধ্বংস মিলেভা। কে চেনে তাঁকে? কোথায় গেল তাঁর সেই উজ্জ্বল ভাবনার মন? কেৈথায় গেল বিজ্ঞানে তাঁর মৌলিক চিন্তা? সব গ্রাস করে ফেলেছেন আইনস্টাইন। তিনি ক্রমশ উঠছেন খ্যাতির শিখরে। আর ক্রমশ তলিয়ে যেতে লাগলেন মিলেভা। যে থিয়োরি অফ রিলেটিভিটির জন্য নোবেল পুরস্কার পান আইনস্টাইন, তাতে তাঁর স্ত্রী মিলেভার অবদান কম ছিল না। কোনওদিনও সেকথা স্বীকার করেননি আইনস্টাইন।
মিলেভার প্রতি আইনস্টাইনের একটি ছোট্ট নিষ্ঠুরতার নিদর্শন দিচ্ছি। মিলেভা-আইনস্টাইনের সহবাস থেকে একটি শিশুকন্যার জন্ম হল। ‘এবার আমাকে বিয়ে করো’– বললেন মিলেভা। বিয়ে করলেন না আইনস্টাইন। হারিয়ে গেল তাঁদরে মেয়ে। কেউ জানল না তাঁর খোঁজ। অবশেষে ১৯০৩ সালে বিয়ে হল অ্যালবার্ট-মিলেভার।
মিলেভার সামনেই নিজের মাসতুতো বোল এলসার সঙ্গে প্রেম করা শুরু করেন আইনস্টাইন। এলসার সঙ্গে বিবাহিত জীবন কাটাতে কাটাতেই আবার এলসার প্রথম বিয়ের ফসল, তাঁর কন্যা, ইলসের প্রেমেও পড়েন এই বিশ্ববরেণ্য বৈজ্ঞানিক! এবং এলসাকে ডিভোর্স করে তাঁকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন।
কী হল তারপর! শুনুন…
লেখা: রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
পাঠ: সুশোভন প্রামাণিক
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস