‘মন্দ নয় সে পাত্র ভালো, রঙ যদিও বেজায় কালো’ কবিতায় এমন পাত্রের সঙ্গে বিয়ে হতেই পারে। কিন্তু বাস্তবে একেবারেই না। তেমনই প্রমাণ মিলল সাম্প্রতিক ঘটনায়। স্রেফ গায়ের রঙ কালো বলে বিয়ের মণ্ডপেই বিয়ে ভাঙলেন খোদ পাত্রী। বেজায় অপমানিত হয়ে মনের দুঃখে বাড়ি ফিরল বরযাত্রী। কোথায় ঘটেছে এই কান্ড? আসুন শুনে নিই।
বিয়ের মণ্ডপে বিয়ে ভাঙার ঘটনা নতুন নয়। সিনেমা হোক বা বাস্তব এমন উদাহরণ রয়ে ভুরি ভুরি। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিয়ে ভাঙার নেপথ্যে থাকে পাত্রপক্ষের সিদ্ধান্ত। কখনও পর্যাপ্ত যৌতুকের অভাব আবার কখনও অন্য কোনও কারণ। বিয়ে ভাঙার ঘটনায় সব সময় সামনে আসে বরপক্ষের নামই। কিন্তু এক্ষেত্রে ঘটেছে ঠিক উল্টোটা। অর্থাৎ বিয়ে ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খোদ পাত্রী।
আরও শুনুন: ‘বিয়ের জন্য সুন্দরী পাত্রী চাই, খুঁজে দিন!’ সরকারি দপ্তরে চিঠি দিয়ে আরজি যুবকের
ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের। সে রাজ্যের কৌশাম্বী জেলার এক গ্রাম সম্প্রতি সাক্ষী থাকল এমনই অদ্ভুত কাণ্ডের। অন্যান্য বিয়ের মতোই ঘটা করে আয়োজন হয়েছিল এই বিয়ের। বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা সহ বিয়ে করতে হাজির হন বরমশাই। সঙ্গে ছিল বিশাল এক বরযাত্রী। তাঁদের যথেষ্ট আপ্যায়ন করেই ঘরে তোলেন পাত্রীপক্ষের লোকজন। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর সেখানে হাজির হন পাত্রী। তাঁর হাতে বরমালা। উপস্থিত সকলেই বেশ উৎফুল্ল হয়ে সেই দৃশ্য দেখছিলেন। সকলেই অপেক্ষা করছিলেন কখন বরের গলায় মালা পরাবেন পাত্রী। কিন্তু তাঁদের সকলের অপেক্ষায় জল ঢেলে অদ্ভুত আচরণ করে বসেন তরুণী। বরের গলায় মালা দেওয়া দূরে থাক, বিয়েটাই নাকচ করে দেন তিনি। মণ্ডপ থেকে চলেও আসেন। ঘটনায় বেজায় অপমানিত হন বরপক্ষের লোকজন। তক্ষণী পাত্রীর পরিবারের কাছে তরুণীর এই অদ্ভুত আচরণের কারণ জানতে চান তাঁরা। পাত্রীর পরিবারও এই ঘটনায় বেজায় অবাক। সঙ্গে সঙ্গে তরুণীর কাছে এমন আচরণের কারণ জানতে চান তাঁরা। জবাবে তরুণী সাফ জানিয়ে দেন, পাত্রের গায়ের রঙ বেজায় কালো। কোনওভাবেই তাঁকে বিয়ে করতে পারবেন না তিনি। এমনকি পাত্রের বয়সও বেশি মনে হয়েছে তাঁর। তাই মণ্ডপেই বিয়ে ভেঙেছেন তিনি। আর এই জবাব শুনে আরও চটে যান পাত্র ও তাঁর বাড়ির লোকজন। সেই মুহূর্তে মণ্ডপ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে এই নিয়ে কড়া ভাষায় অভিযোগ দায়ের করেন।
আরও শুনুন: বাড়িতে কড়া শাসন, পর্নদুনিয়ায় পা রেখে তবু মিয়া খালিফা হওয়ার স্বপ্ন মুসলিম তরুণীর
পঞ্চায়েতের তরফে ডেকে পাঠানো হয় তরুণীকে। জানতে চাওয়া হয় বিয়ের দিন এমন আচরণের কারণ কী? আগের মতোই এক উত্তর দেন তরুণী। তবে সেইসঙ্গে যোগ করেন, বিয়ের আগে তাঁকে বরের যে ছবি দেখানো হয়েছিল, তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। এই যুক্তি মানতে বাধ্য হন পঞ্চায়েত সদস্যরাও। তবে এমন ঘটনা এর আগে ওই অঞ্চলের মানুষজন দেখেননি বললেই চলে। তাই সকলেই রীতিমতো অবাক ওই তরুণীর আচরণে।